পাটুল ভ্রমন, মিনি কক্সবাজারে কয়েকঘন্টা – ফটোব্লগ
পাটুল যাওয়ার পরিকল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই হচ্ছিলো। একাধিক গ্রুপের সাথে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও, কোন না কোন একটা সমস্যা কারনে শেষ পর্যন্ত কাগজ কলমেই থেকে গেছে সব পরিকল্পনা। আমার জীবনের আর সব ইভেন্ট এর মতো, এটাও হয়ে গেছে হটাৎ করেই, এক বাটি নুডুলস আর আমরা চারজন। গন্তব্য, মিনি কক্সবাজার খ্যাত পাটুল, নাটোর।
এছাড়াও চারপাশে সিগারেট, কোমল পানীয়, বাদাম সহ অন্যসব সচরাচর জিনিস পাওয়া যায়। কেনাকাটার পর এবার নৌকা খুঁজে পানিতে নেমে যাওয়ার পালা।
পাটুল এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর বিশালতা। পাটুল হয়তো আকারে দেশের অন্য সব বিলের সমান না হতে পারে, কিন্তু এর পাড়ে দাঁড়িয়ে এর অপার বিশালতার দিকে তাকিয়ের নিজের ক্ষুদ্রতার অনুভব করা যায়।
ইঞ্জিন চালিত নৌকার ছাউনিতে বসেই প্রথমে খাবার গুলোকে মুক্ত করার কাজ শুরু হলো। এই ফাঁকে ক্যামেরা হাতে বাইরে দাঁড়িয়ে চেষ্টা করলাম পাটুলের কিছু চেহারা ফ্রেমবন্দি করার।
পাটুলের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু গ্রাম, যখন পানি চারেদিকে থৈ থৈ করে, এই গ্রাম গুলো দ্বীপের মতো জেগে থাকে বিশালাকার এই জলাধারের মাঝে। এই সময়টাতে উনাদের চলাচল এর প্রধান মাধ্যম হলো ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো। এই নৌকাগুলোর বেশিওরভাগ মাঝির বাড়ি এই দ্বীপ-সদৃশ গ্রামগুলোতে।
বাকি সবাই খাওয়াতে ব্যাস্ত ছিলো, ছবি তোলার ফাঁকে কখন আমার খাবারের ওপর তারা হামলা করেছে, বুঝতে পারি নি। সব কিছু সামান্য একবার চেখে নিয়ে আবার নৌকার সামনে অবস্থান নিলাম।
মাঝে মাঝে দুইএকবার ক্যামেরার সামনে যাওয়ার সুযোগ হলো। আমি স্বভাবসুলভ ভাবেই ক্যামেরার সামনে ঠিক কিভাবে দাঁড়াতে হয়, ব্যাপারটা আয়ত্ব করতে পারিনি। তাই যতোদুর সম্ভব নিজের চেহারা না দেখিয়ে পার করার চেষ্টা করলাম।
এর মাঝে আমরা সবাই যে যার মতো করে কিছু “Larger than Life” ছবি তোলার চেষ্টা করলাম।
পাটুলে চলতে চলতে বেশ মজার কিছু জিনিস চোখে পড়বে। পানি সরবরাহকারী লাইনের পিলার, যা নিজেই এখন অর্ধেক পানির নিচে।
কিংবা এই স্কুলটার কথাও ধরা যেতে পারে। নির্মানের সময় পানির কথা ভেবে নির্মিত এই স্কুলে, এই সময়টায় যাতায়ত করার একমাত্র উপায় সংলগ্ন একটা বাঁশের সাঁকো। ব্যাপারটা এক দিক দিয়ে বেশ আকর্ষনীয় হলেও, স্কুলের বাচ্চাগুলোর কষ্টটাও ছোট করে দেখার মতো নয়।
কিংবা এই ভদ্রলোকের কথা, বুক পর্যন্ত পানিতে নেমে উনি জাল বিছিয়ে চলেছেন মাছের জন্য।
অথবা এই পানির পাম্পটির কথা, গ্রীষ্মকালে যার পানি সরবরাহ করার কথা। এই মূহূর্তে অবশ্য পানির কোন অভাব নেই এর। নিচে ওপরে, কোথাও।
সব মিলিয়ে দেখার অনেক কিছুই আছে পাটুলে। অনেকেই লম্বা সময় নিয়ে যাওয়ার প্লান করেন। ব্যাক্তিগত অভিমতে বিকেলে পাটুল ঘোরা সবচেয়ে ভালো, রোদ এবং আবহওয়া দুয়ে মিলে চমৎকার একটা পরিবেশ। শেষে এসে একটা সূর্যাস্ত দেখার বাসনায় পাটুল থেকে ঘরের ফেরার সময় এসে যায়।
চমৎকার একটা দিনের শেষ হয় চমৎকার কিছু স্মৃতি নিয়ে।
# Google Map Direction [ https://goo.gl/b7ZU7S ]