< Go Back Home

UTA Flight 772 এবং এক হৃদয় বিদারক স্মৃতি চিহ্ন

হুট করেই মাথায় ভূত চেপেছিলো বিদ্ধস্ত বিমান নিয়ে পড়াশোনা করার। পড়তে পড়তে হটাৎ চোখ পড়লো একটা আর্টিকেল এর ওপর। তেমন বিশাদ কিছু লেখা নেই। গুগল ম্যাপের একটা ডিরেকশন দেওয়া আছে। ম্যাপে ঢুকে দেখতে গেলাম, ঘটনা কি। এবং স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।

বিমানের বিধস্ত ফিউজিল্যাজ

বিমানের বিধস্ত ফিউজিল্যাজ

**UTA Flight 772 ছিলো ফ্রেঞ্চ এয়ারলাইন্স এর যাত্রী পরিবহনকারী একটা ডিসি-১০ বিমান। ১৯৮৯ সালের ১৯ সে সেপ্টেম্বর, উড্ডোয়নের ৪৬ মিনিট পরে,  বিমানের কার্গো হোল্ডে একটা বোমা বিস্ফোরনের কারনে বিমানটি নাইজেরিয়ার কাছের সাহারা মরুভূমিতে বিদ্ধস্ত হয়। মারা যায় ১৭০ জন, যার মধ্যে ১৫৫ জন যাত্রী এবং ১৫ জন ক্রু। **

যদিও পুরো হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিলো সেই সময়ের চাঁদ ( দেশ ) এর আমেরিকান রাষ্ট্রদূত এর স্ত্রীকে হত্যা করা। প্রাক্তন আমেরিকান রাষ্ট্রদূত রবার্ট এল পহ এর স্ত্রী বনি পহ ঐ ফ্লাইটে ছিলেন।

বিমানের ফ্লাইট পাথ

বিমানের ফ্লাইট পাথ

মুলত তৎকালীন লিবিয়ান নেতা গাদ্দাফী এবং চাঁদ এর সরকারের মধ্যে চলা টানাপড়োন এবং মাতিন আল সারার যুদ্ধে লিবিয়ার পরাজয়ের কারনে সৃষ্ট উতপ্ত পরিস্থিতি। গাদ্দাফী সেই সময় আমেরিকা এবং ফ্রান্স কে দায়ী করে এবং বলে যে তারা লিবিয়াকে পায়ের তলায় নেওয়ার জন্যই এ সব করছে। এবং সেখান থেকেই বেশ কিছু এক্সট্রিম টেরোরিষ্ট সংগঠন, যাদের লক্ষ এবং গাদ্দাফীর লক্ষ প্রায় একই রকম ছিলো, তারা এর প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালায়। এই ঘটনা সাথে গাদ্দাফীর শ্যালক, আবদুল্লাহ সেনুস্যি প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলো।

যখন এই ঘটনাটার কথা সবাই ভুলে যেতে বসেছিলো, ভুলতে পারেনি নিহতদের পরিবারেরা। তারা নিজেদের মধ্যে একটা সংগঠন তৈরী করে, Les Familles de l’Attentat du DC-10 d’UTA । এবং দূর্ঘটনার ১৮ বছর পরে, তারা সবাই একত্রিত হয় সেই স্থানে।

নিহতদের পরিবারের সদস্যরা একত্র হয়

নিহতদের পরিবারের সদস্যরা একত্র হয়

বিমানটা এতো বেশি দূর্গম একটা স্থানে বিদ্ধস্ত হয় যে, বিমানের ধ্বংসাবশেষ এর সবটুকু নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এখনও বেশ কিছু ভাঙ্গা অংশ সেখানে পড়ে রয়েছে।

বিমানের ধ্বংসাবশেষ

বিমানের ধ্বংসাবশেষ
বিমানের ধ্বংসাবশেষ
বিমানের ধ্বংসাবশেষ
বিমানের ধ্বংসাবশেষ
বিমানের ধ্বংসাবশেষ

এবং তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তারা স্থানীয় সরকারের অনুমতি নিয়ে, সেখানে একটি মেমোরিয়াল বানানোর প্লান করে। একাজে নিহতদের স্বজনদের পাশাপাশি, সাহায্য করে স্থানীয় জনগন।

মেমোরিয়াল তৈরীর কাজ শুরু হয়

মেমোরিয়াল তৈরীর কাজ শুরু হয়
স্থানীয় জনগনের অংশগ্রহন
স্থানীয় জনগনের অংশগ্রহন

প্রাথমিক ডিজাইনে প্রথমে প্রায় ২০০ ফুট ব্যাসার্ধ নিয়ে শুধুমাত্র পাথর দিয়ে একটা বৃত্ত তৈরী করা হয়।

পাথরের বৃত্ত

পাথরের বৃত্ত
নির্মানাধীন বৃত্ত
নির্মানাধীন বৃত্ত

যায়গাটা এতো বেশি দূর্গম ছিলো, যে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে পাথর বয়ে আনতে হয়েছে এটা বানাতে।

বালিতে ট্রাকের চাকার দাগ

বালিতে ট্রাকের চাকার দাগ
চলছে নির্মানকাজ
চলছে নির্মানকাজ
চলছে নির্মানকাজ
চলছে নির্মানকাজ
চারদিকের চারটা ত্রিভুজের একটি
চারদিকের চারটা ত্রিভুজের একটি
অপর একটি ত্রিভুজ
অপর একটি ত্রিভুজ

মুল বৃত্তের ইনার সার্কেল দিয়ে, ১৭০ টি ভাঙ্গা আয়না রাখা হয়, যা প্রতিনিধিত্ব করে নিহত ১৭০ জনের।

ভাঙ্গা আয়না

ভাঙ্গা আয়না
ইনার সার্কেলের আয়না
ইনার সার্কেলের আয়না

মেমোরিয়াল এর একদিকে রাখা হয় বিদ্ধস্ত প্লেনের একটা পাখা।

পাখাটি বসানো হচ্ছে

পাখাটি বসানো হচ্ছে
পাখাটি বসানো হচ্ছে
পাখাটি বসানো হচ্ছে

পাখার গায়ে লিখে দেওয়া হয় নিহত ১৭০ জনের নাম।

পাখার গায়ে নিহতদের নাম

পাখার গায়ে নিহতদের নাম
১৭০ টি নাম
১৭০ টি নাম
নাম সহ বসানো পাখাটি
নাম সহ বসানো পাখাটি

এই মেমোরিয়াল নির্মানের ব্যায় এর কিছুটা এসেছিলো লিবিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের আত্নীয় স্বজনদের দেওয়া ১৭০ মিলিয়ন ডলার এর মধ্যে থেকে।

মেমোরিয়াল এর নির্মান কাজ শেষের দিকে

মেমোরিয়াল এর নির্মান কাজ শেষের দিকে
সাইড ভিউ
সাইড ভিউ
ভাঙ্গা আয়না সহ মেমোরিয়াল
ভাঙ্গা আয়না সহ মেমোরিয়াল
মেমোরিয়াল নির্মান শেষ
মেমোরিয়াল নির্মান শেষ

সম্পূর্ন মেমোরিয়াল এর বেশ কিছু ছবি,

সম্পূর্ন মেমোরিয়াল

সম্পূর্ন মেমোরিয়াল
সম্পূর্ন মেমোরিয়াল
সম্পূর্ন মেমোরিয়াল
আকাশ থেকে মেমোরিয়াল এর একটা ছবি
আকাশ থেকে মেমোরিয়াল এর একটা ছবি
মেমোরিয়াল এর আরেকটা ছবি
মেমোরিয়াল এর আরেকটা ছবি
গুগল ম্যাপে মেমোরিয়াল, স্যাটেলাইট থেকে
গুগল ম্যাপে মেমোরিয়াল, স্যাটেলাইট থেকে

নিজে থেকেই দেখে নিন, সেই মেমোরিয়াল,

গুগল ম্যাপে দেখুন

আরও জানতে চাইলে,