< Go Back Home

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন – ব্যবচ্ছেদ

গত কয়েকদিনের ঘটনায় আমরা সামনের ক্ষতি গুলো চোখে দেখতে পাচ্ছি, প্রত্যক্ষ ইফেক্ট গুলো। পরোক্ষ ইফেক্ট গুলো দেখতে পাচ্ছি না, যেটা কয়েকগুন বেশি ভয়ংকর।

এই ছাত্রছাত্রীগুলো, যারা একটা সময়ে এই দেশের হাল ধরবে, তারা তাদের প্রতি হওয়া আক্রমনকে মনে রাখবে, তাদের প্রতি হওয়া অন্যায়কে মনে রাখবে। যে কারনেই হয়ে থাকুক, যার কারনেই হয়ে থাকুক, তারা যে এর শিকার হয়েছে, এটা দিবালোকের মত সত্য। ফলাফল, একটা পুরো জেনারেশনের ঘৃনা নিয়ে চলতে হবে আওয়ামী লীগকে।

তারচেয়েও বড় সমস্যা অন্য জায়গায়। আওয়ামী লীগ, একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, এই জিনিসগুলো একসাথে একই সুতোয় বাঁধা। আওয়ামী লীগের প্রতি এদের ক্ষোভ হতাশা এদের এই জিনিসগুলোর প্রতি বিরূপ করে তুলবে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান, বঙ্গবন্ধুর অবদান বার বার তাদের সামনে আসবে, আর একটা ক্ষোভ এর জায়গা থেকে সব গুলোর ওপর তাদের ক্ষোভ জমা শুরু হবে।

আমরা যেটা ভুলে যাচ্ছি, এই ছেলে মেয়ে গুলো যখন দেশের কান্ডারী হবে, তখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সচক্ষে দেখা সিংহভাগ মানুষ বেঁচে থাকবে না। এদের দেশের জন্মের গল্প শোনানোর কেউ থাকবে না, থাকবে শুধু বই আর ইতিহাসের পাতা। প্রতিবার যখন তারা আওয়ামী লীগ শব্দটার সামনে আসবে, তাদের চোখে এই দিনগুলো ভাসবে। তাদের মনে জমে থাকা ক্ষোভ, ঘৃনা সব বের হয়ে আসবে। যে জয় বাংলা স্লোগান এক সময় মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় প্রেরণার জায়গা ছিলো, সেই জয় বাংলা স্লোগান শুনে তারা ভয় পাবে।

আর যারা এই সুযোগ নিয়ে তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিমুখ করতে চায়, তাদের খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। মিথ্যা ইতিহাস রচনা করলে সেটা খন্ডন করার জন্য কেউ বেঁচে থাকবে না।

বাংলাদেশ এখন সংকটে আছে, কিন্তু আরো বড় সংকট হবে যেদিন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন তুলবে ভবিষৎ প্রজন্ম, আর সেটার দায় নিতে হবে আমাদের।

ছবি ক্রেডিট – https://commons.wikimedia.org/wiki/File:Students_Blocked_Road_for_safe_Road_12.jpg